২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৬ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শর্ষের ভূত শর্ষের মাঝেই থেকে যায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ জনি ফটো গ্যালারী চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ।
ধারাবাহিক নিউজ প্রথম পর্ব (১)
মোঃ মিনারুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি/মোঃ আমিনুল ইসলাম দামুড়হুদা বিশেষ প্রতিনিধি::-
বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গা অফিসের পদে পদে পাতা রয়েছে দুর্নীতির জাল। বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গা মোটরযান পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম ও সিল ম্যাকানিকাল মোঃ ওবায়দুল রহমান তাদের নির্ধারিত খলিফা, জেলা প্রশাসনের এর মেন গেটের সামনে নির্ধারিত একটি দোকান জনি ফটো গ্যালারী এবং দালাল মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গা অফিস। জানা যায় নিয়মের বাইরে লোক নিয়োগ, লাইসেন্স পরীক্ষায় চুক্তি, ফিটনেসের অতিরিক্ত টাকাসহ নানা কাজের মাধ্যমে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে এই জনি ফটো গ্যালারী সিন্ডিকেট। এছাড়া লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস, রোড পারমিট, ট্যাক্সসহ সরকারি নির্ধারিত ফি জমা দেয়ার মতো টাকা না থাকে তাহলেও এসব কাগজপত্রের অবিকল নকল কাগজ করে দেয়া হচ্ছে নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে। এতে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি হয়রানিতে পড়তে হয় ট্রাফিক পুলিশকে। ট্রাফিক সদস্য আজকের ক্রাইম নিউজ কে বলেন আমরা যখন অভিযানে যাই বা বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করি। তখন অনেক গাড়ির কাগজপত্র দেখা যায় ভুয়া। এরমধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস, ট্যাক্স, রোড পারমিটসহ নানান ধরণের কাগজপত্র জাল পাওয়া যায়। ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্যর বক্তব্যে ও কয়েকটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করে আজকের ক্রাইম নিউজ। অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি এক বন্ধুর মোটর সাইকেলের জন্য একটি ভুয়া কাগজ বানাতে যান ছন্দা নাম মৌসুমী নামের এক ব্যক্তি। সেখানে পরিচয় হয় এক লোকের সাথে কথা মতো সব শুনে প্রয়োজনীয় ছবি ও কাগজসহ ৬ হাজার টাকা নিজের ভাইয়ের কাছে দিয়ে যেতে বলেন। কথা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও টাকা জেলা প্রশাসনের সামনে জনি ফটো গ্যালারীতে দোকানে বসা জনির হাতে টাকা দিয়ে যান তখন জনি বলে দুইদিন পর কাগজ নিয়ে যেতে পারবেন। চুয়াডাঙ্গায় বিআরটিএ টাকা দিলেই পাশ না দিলে ফেল কাগজপত্র হাতে পেয়ে দেখা যায় সহকারী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট শীল স্বাক্ষর রয়েছে। এমনকি সরকারি কাগজে অবিকল নকল করে দেয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয় বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গা অফিসের সহকারী পরিচালক ও লাইসেন্স শাখার মোটরযান পরিদর্শক এবং তাদের নির্ধারিত খলিফার নিয়ন্ত্রনে রয়েছে জনির ফটো গ্যালারী দোকান। মূলত যারাই বিআরটিএ অফিসে ফরমসহ বিভিন্ন কাজে যোগাযোগ করেন তাদেরকে নির্ধারিত দোকানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপরই নির্ধারিত লোকজন নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে কাজটি হাতে নেন। আর ভেতরে থেকে জনিসহ অন্যান্য সরকারি কাগজপত্র, রেকর্ডরুম থেকে কাছাকাছি তথ্য এনে ভুয়া লাইসেন্স বা ফিটনেসসহ অন্যান্য কাজ করে থাকেন। এরপর এসব কাগজপত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী সহকারী পরিচালক বা মোটরযান পরিদর্শকের শীল-স্বাক্ষর দিয়ে গ্রাহকদের সরবরাহ করেন চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ টাকা হলে হাজিরা দিলেই লাইসেন্স। এভাবেই বিআরটিএ অফিস থেকে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে। কারণ ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা যখন এসব ভুয়া কাগজপত্র সনাক্ত করেন কিংবা কোন কাগজপত্র নিয়ে তাদের সন্দেহ হলে তারা বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গা অফিস থেকে মূল কাগজ চেয়ে আবেদন করেন। এরপর সেগুলো ভুয়া প্রমাণিত হলে কোর্টে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন সার্জেন্ট। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ মনিরা পারভীন বলেন আমরা এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ( চলবে )